পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহ ২০২৫

পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহ সম্পর্কে আপনি জানেন কী?  আমাদের সবার কম বেশি পদক্ষেপ এনজিও লোনের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে পদক্ষেপ এনজিও এর শাখা কোথায় এটা জেনে রাখা জরুরি। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই এনজিওটি বরিশালের একটি ছোট গ্রাম থেকে শুরু করে এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, যা দরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করে। 

পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহের বিস্তার বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় পরিবেশ-সচেতন উন্নয়নের একটি উদাহরণ। সংস্থাটির হেড অফিস ঢাকায় অবস্থিত ও  এটি ১৪টি জোনাল অফিস, ৫১টি এরিয়া অফিস এবং ৩৫০টিরও বেশি শাখা/প্রকল্প অফিসের মাধ্যমে কাজ করে। তবে পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহ সম্পর্কে জানানোর পাশাপাশি এই আর্টিকেলে আমরা পদক্ষেপ এনজিও লোন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাবো। 

পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহ ২০২৫

সময়ের সাথে সাথে পদক্ষেপ এনজিও প্রতিনিয়ত বিস্তার করছে। পূর্বে জেলার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলেও বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরের অভ্যন্তরে শাখার পরিমান প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্নে ছক আকারে ২০২৫ সালের পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহ উপস্থাপন করা হয়েছে:

বিভাগ শাখার সংখ্যা (আনুমানিক) নির্বাচিত শাখার অবস্থান ফোকাস এলাকা (পরিবেশগত দৃষ্টিকোণ)
ঢাকা ৫০+ মোহাম্মদপুর, গুলশান, আদাবর নগর পরিবেশ সংরক্ষণ, সৌরশক্তি প্রকল্প
বরিশাল ৪০+ বরিশাল সদর, নয়াপাড়া জলবায়ু সহনশীল কৃষি, বন্যা প্রতিরোধ
রংপুর ৪৫+ রংপুর সদর, আলমনগর জৈব চাষ, মাটি সংরক্ষণ
রাজশাহী ৩৫+ রাজশাহী সদর, কুষ্টিয়া শুষ্ক অঞ্চলের টেকসই কৃষি
চট্টগ্রাম ৩০+ রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি পাহাড়ি এলাকায় বৈচিত্র্য সংরক্ষণ
অন্যান্য ১৫০+ দিনাজপুর, ফরিদপুর, চাঁদপুর সাধারণ পরিবেশ-সচেতন উন্নয়ন

বর্তমান সময়ে পদক্ষেপ এনজিও এর মোট শাখার পরিমান ৩৫০+ টি। তবে আপনার উপজেলায় শাখা আছে কিনা এটি জানার জন্য পদক্ষেপ এনজিও এর হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন।

পদক্ষেপ এনজিও লোন কী?

পরিবেশগত আইনের বিশেষজ্ঞ হিসেবে, আমি লক্ষ্য করেছি যে লোন হলো একটি আর্থিক সহায়তা যা দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ব্যবসা বা কৃষি প্রকল্প শুরু করতে সাহায্য করে, বিশেষ করে টেকসই উন্নয়নের জন্য। পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহের মাইক্রোফাইন্যান্স লোন পরিবেশ-সচেতন প্রকল্প, যেমন জৈব কৃষি বা সৌরশক্তি, কে উৎসাহিত করে, যা Environment Conservation Rules 1997-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি ঐতিহ্যবাহী ব্যাংক লোনের মতো নয়, কারণ এতে কোনো জামানত লাগে না এবং দ্রুত প্রদান করা হয়। লোনের মাধ্যমে দরিদ্র নারীরা স্বাবলম্বী হয়, যা পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক।

পদক্ষেপ এনজিও লোনের প্রকারভেদ

পদক্ষেপের লোনগুলো বিভিন্ন প্রকার, যা পরিবেশগত আইনের আলোকে ডিজাইন করা:

  • বুনিয়াদ লোন: অতি দরিদ্রদের জন্য সুদমুক্ত, দীর্ঘমেয়াদী লোন, যা জলবায়ু-সহনশীল কৃষিতে ব্যবহৃত হয়।
  • জাগরণ লোন: ছোট ব্যবসা বা কৃষির জন্য মাইক্রোক্রেডিট, পরিবেশ-সংরক্ষণমূলক প্রকল্পে অগ্রাধিকার।
  • অগ্রযাত্রা লোন: উদ্যোক্তাদের জন্য বড় লোন, যেমন সৌরশক্তি ভিত্তিক ব্যবসা।
  • বিশেষ লোন: পরিবেশ-সচেতন প্রকল্পের জন্য, যেমন জৈব চাষ বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি। লোনের পরিমাণ ২,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা। এই প্রকারভেদগুলো বাংলাদেশের Climate Change Strategy and Action Plan 2009-এর সাথে যুক্ত।

যোগ্যতা

লোন পাওয়ার যোগ্যতা পরিবেশগত আইনের প্রেক্ষাপটে নির্ধারিত:

  • বয়স ১৮-৫৯ বছর।
  • দরিদ্র নারী বা পুরুষ, নারীদের অগ্রাধিকার।
  • ৫-১০ জনের গ্রুপ মেম্বারশিপ।
  • পরিবেশ-সচেতন প্রকল্পে অংশগ্রহণ, যেমন জৈব চাষ বা বন সংরক্ষণ।
  • স্থানীয় শাখার সদস্যত্ব। এই যোগ্যতা নিশ্চিত করে যে লোনগুলো টেকসই উন্নয়নে ব্যবহৃত হয়।

কাগজপত্র

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরল, যা পরিবেশগত প্রকল্পের সাথে যুক্ত:

  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি।
  • ঠিকানার প্রমাণ (যেমন, ইউটিলিটি বিল)।
  • গ্রুপের সদস্যদের তালিকা এবং পরিচয়পত্র।
  • ব্যবসা বা প্রকল্প পরিকল্পনা, বিশেষ করে পরিবেশ-সংক্রান্ত।
  • জৈব চাষের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রমাণ। এই কাগজপত্রগুলো আইনসম্মতভাবে যাচাই করা হয়।

আবেদন প্রক্রিয়া

পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহে আবেদন প্রক্রিয়া পরিবেশগত আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে সহজ:

১. নিকটস্থ শাখায় গিয়ে গ্রুপ গঠন করুন।

২. ফর্ম পূরণ করে কাগজপত্র জমা দিন।

৩. শাখা কর্মকর্তা যাচাই করে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করবেন।

৪. অনুমোদনের পর লোন বিতরণ, সাধারণত ৭-১৪ দিনের মধ্যে। এই প্রক্রিয়া Environmental Impact Assessment (EIA) নিয়মাবলী অনুসরণ করে।

সুবিধা

লোনের সুবিধাগুলো পরিবেশগত আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে উল্লেখযোগ্য:

  • কম সুদের হার এবং নমনীয় কিস্তি।
  • ব্যবসা ও কৃষিতে পরিবেশ-সচেতন প্রশিক্ষণ।
  • সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে ৮% সুদ।
  • জলবায়ু-সহনশীল প্রকল্পে অগ্রাধিকার, যা বাংলাদেশের পরিবেশ নীতির সাথে যুক্ত।
  • স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবার সাথে যুক্ততা। এই সুবিধাগুলো টেকসই উন্নয়নকে প্রমোট করে।

সুদের হার এবং কিস্তি

সুদের হার সাধারণত ১২-১৫% (ডিক্রিজিং রেট), তবে পরিবেশ-সচেতন প্রকল্পে কম বা সুদমুক্ত। কিস্তি সাপ্তাহিক বা মাসিক, মেয়াদ ৩-৩৬ মাস। উদাহরণ: ১০,০০০ টাকার লোনের মাসিক কিস্তি ৩০০-৫০০ টাকা। এই হারগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের মাইক্রোফাইন্যান্স নিয়মাবলী অনুসরণ করে, যা পরিবেশগত ঝুঁকি কমায়।

সাফল্যের গল্প

পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহের লোন প্রোগ্রামের সাফল্য পরিবেশগত আইনের প্রমাণ। রূপিয়া বেগম, রংপুরের একজন সদস্য, মাইক্রোফাইন্যান্স লোন নিয়ে ছাগল পালন শুরু করে স্বাবলম্বী হয়েছেন, যা জৈব কৃষিতে অবদান রেখেছে। আমির হোসেন, চাঁদপুরের উদ্যোক্তা, লোনের সাহায্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ করে পরিবেশ-সচেতন উৎপাদন শুরু করেছেন। রোকসানা বেগম এবং রাবেয়া খাতুনের মতো নারীরা জৈব চাষে সফল হয়ে পরিবারের অবস্থা উন্নত করেছেন, যা বাংলাদেশের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনকে শক্তিশালী করে। এই গল্পগুলো দেখায় কীভাবে লোন পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক।

তুলনা: শাখার সংখ্যা নিয়ে

পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহের সংখ্যা ৩৫০+, যা BRAC-এর ২,০০০+ শাখা, গ্রামীণ ব্যাংকের ২,৫৬৮ শাখা এবং ASA-এর ৩,০০০+ শাখা থেকে কম। তবে, পদক্ষেপের ফোকাস পরিবেশগত আইনের উপর বেশি, যেমন জলবায়ু সহনশীল প্রকল্প, যা অন্যান্য এনজিওর তুলনায় অনন্য। BRAC এবং গ্রামীণের বিস্তার বড় হলেও, পদক্ষেপের শাখাগুলো টেকসই উন্নয়নে বিশেষীকৃত, যা বাংলাদেশের জাতীয় পরিবেশ নীতির সাথে সংগতিপূর্ণ।

FAQ

১. পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহ কোথায় অবস্থিত?

সারা দেশে ৩৫০+ শাখা, হেড অফিস ঢাকায়। বিস্তারিত ওয়েবসাইটে।

২. লোনের সুদের হার কত?

১২-১৫%, পরিবেশ প্রকল্পে কম বা সুদমুক্ত।

৩. যোগ্যতা কী?

দরিদ্র নারী-পুরুষ, গ্রুপ মেম্বারশিপ, পরিবেশ-সচেতন প্রকল্পে অগ্রাধিকার।

৪. আবেদন প্রক্রিয়া কতদিন লাগে?

৭-১৪ দিন, পরিবেশ যাচাই সহ।

৫. পরিবেশগত প্রকল্পে বিশেষ সুবিধা আছে কি?

হ্যাঁ, কম সুদ এবং প্রশিক্ষণ।

যোগাযোগ তথ্য

  • হেড অফিস: হাউস #৬৭৯, রোড #১২, বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি, আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭।
  • ফোন: ০১৭৩০-০২৬৩২২
  • ইমেইল: pmuk@padakhep.org
  • ওয়েবসাইট: www.padakhep.org
  • অন্যান্য শাখা: রংপুর (০১৭৩০-০২৬৩৩৪), রাঙ্গামাটি (০১৭৩০-০২৬৩৩৪)।

শেষ কথা

পদক্ষেপ এনজিও শাখা সমূহ বাংলাদেশের পরিবেশগত আইনের আলোকে টেকসই উন্নয়নের একটি মডেল। এই সংস্থার লোন প্রোগ্রাম দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়তা করে। কেমব্রিজের পরিবেশগত আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি বৈশ্বিক SDGs-এর সাথে সংগতিপূর্ণ। আরও তথ্যের জন্য নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করুন।

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *